ইসলামিক সোস্যাল সার্ভিস ফাউন্ডেশন 

রেজিঃ IV-190201249/2024🔰


এই সংস্থা একটি অলাভজনক ও অরাজনৈতিক সমাজসেবামূলক সংস্থা। এই সংস্থা মানবতার শিক্ষক, মানবসেবার আদর্শ নবী সাঃ এর পদাঙ্ক অনুসরণ করে মানবতার সেবার জন্য ও আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের জন্য খোলা হয়েছে।

♻️ইসলামিক সোস্যাল সার্ভিস ফাউন্ডেশন প্রধানত তিনটি সেক্টরে নিজেদের কার্য পরিচালনা করে।

শিক্ষা 🟠 সেবা 🟢 দাওয়াহ


🔴 শিক্ষা- একটি দেশ, একটি জাতির অগ্রগতির মূল চালিকা শক্তি হলো শিক্ষা। এই বিবেচনায় বলা হয়, "শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড"। অর্থাৎ একজন মানুষ যেমনি মেরুদণ্ড সোজা করে স্থির দাঁড়াতে পারেন, ঠিক তেমনি একটি জাতির ভিত্তিমূল,উন্নয়ন,অগ্রগতি এবং সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া নির্ভর করে তার শিক্ষার উপর। যে জাতি যত বেশি শিক্ষিত, সে জাতি তত বেশি উন্নত,সভ্য এবং অগ্রসর। সুন্দর এ ধরণীর বুকে সর্বশ্রেষ্ঠ মাখলুকাত হচ্ছে মানুষ। মানুষের এই একক শ্রেষ্ঠত্ব লাভের কারণ মানুষের রয়েছে বিবেকবোধ, ন্যায়বোধ ও মনুষ্যত্ববোধ। আর মনুষ্যত্ববোধ অর্জনের সর্বশ্রেষ্ঠ হাতিয়ার হচ্ছে শিক্ষা। শিক্ষা মানবতার চারিত্রিক উৎকর্ষ লাভের মাধ্যম ও আত্মউপলব্ধির চাবিকাঠি। আত্মবিকাশ ও সুকোমলবৃত্তির পরিস্ফুটন ও জীবনের সব সমস্যার দিকনির্দেশক। মানবজাতিকে নৈতিক শিক্ষার পবিত্র স্পর্শে একটি সুসভ্য ও সুশীল মানবিক গুণসম্পন্ন জাতিতে পরিণত করতে যে মহামানব শ্রেষ্ঠ শিক্ষক রূপে পৃথিবীতে আগমন করেছিলেন তিনি হলেন আমাদের নবী, মানবতার মহান শিক্ষক হজরত মুহাম্মদ সা:।

হজরত মুহাম্মদ সা: ছিলেন পৃথিবীর ইতিহাসে মানবজাতির জন্য সর্বোত্তম আদর্শবান শিক্ষক। কোনো শিক্ষক যদি তার আদর্শ খুঁজে পেতে চায়, তবে দারুল আরকামে শিক্ষাদানরত বিশ্বনবী সা:ই হবেন তার জন্য সর্বোত্তম আদর্শ। _আর এ সম্পর্কে তিনি নিজেই ঘোষণা করেছেন ‘আমি শিক্ষক রূপে প্রেরিত হয়েছি, যাতে মানবজাতিকে উত্তম চরিত্রের শিক্ষা প্রদান করতে পারি।’ (তিরমিজি )।_

জ্ঞান অর্জন সম্পর্কে ইসলামের নবী রাসূলে আকরাম সা: রেখে গেছেন অনুপম এক উৎসাহের বাণী। সমগ্র আরব ভূখণ্ড যখন জাহেলিয়াতের ঘোর অমানিশায় আচ্ছাদিত, ঠিক সেই মুহূর্তে _তিনি দ্ব্যর্থকণ্ঠে ঘোষণা করলেন ‘জ্ঞান অর্জন করা প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর ওপর ফরজ।’ (বায়হাকি :-১৬১৪)।_

 এমনকি হেরা গুহায় ধ্যানরত নবী সা:-এর কাছে হজরত জিব্রাইল আ: সর্বপ্রথম যে আসমানি পয়গাম নিয়ে এসেছিলেন তা ছিল ‘পড়ো তোমার প্রভুর নামে।’ কেননা পড়া ছাড়া কোনো জাতির সুপ্ত মেধার বিকাশ ঘটতে পারে না, পৌঁছতে পারে না উৎকর্ষতার চরম সোপানে। এ মর্মে পবিত্র কুরআনুল কারিমে বর্ণিত হয়েছে _যারা জানে আর যারা জানে না তারা কি সমান হতে পারে? (সূরা জুমার : ৯)।_

শিক্ষাকে সমাজের সর্বস্তরে পৌঁছানোর লক্ষ্যে হজরত মুহাম্মদ সা: ঘোষণা করেছেন একের পর এক উৎসাহের বাণী। _তিনি বলেন, ‘একজন এলেমহীন আবেদের চেয়ে একজন আলেম (জ্ঞানী) ব্যক্তির মর্যাদা তত বেশি, তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে নিম্নতম ব্যক্তি অপেক্ষা আমার মর্যাদা যত বেশি।’ (সহীহ তারগীব:- ৮১, আদ - দারেমী:- ১/৯৭-৯৮) মিশকাত:-২১৩,)।_

_জ্ঞান অন্বেষণের পথকে নবী সা: জান্নাতের পথ বলে ঘোষণা করেন। নবী করিম সা: বলেন, ‘আসমান ও জমিনে অবস্থানকারী সবাই এমনকি গভীর পানির মাছও জ্ঞান অন্বেষণকারীর জন্য দোয়া করে।’ ( তিরমিজি:-২৬৮৫, মিশকাত:- ২১৩)।_

হজরত মুহাম্মদ সা: জ্ঞানচর্চার ব্যাপারে শুধু অনুপ্রেরণাই দেননি, বরং পরকালীন পুরস্কারের কথা বলে জ্ঞানচর্চার ব্যাপারে আমাদেরকে করে গেছেন প্রলুব্ধ। _হজরত আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সা: ইরশাদ করেছেন ‘যখন মানুষ মরে যায় তখন তার আমল ও সওয়াবের ধারা বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু তিন ধরনের আমলের সওয়াব সব সময় অব্যাহত থাকে। যথা ১. সদকায়ে জারিয়াহ, ২. এমন জ্ঞান, যা দ্বারা মানুষের কল্যাণ সাধিত হয়, ৩. সুসন্তান, যে তার জন্য দোয়া করে।’ (সহীহ মুসলিম:- ৪৩১০)।_ আমাদের এই সংস্থা সমাজের শিক্ষা ব্যবস্থাকে উন্নত করার লক্ষ্যে ও শিক্ষা সংক্রান্ত সাহায্যের জন্য গঠিত হয়েছে।

🟠সেবা- ইসলামের দৃষ্টিতে সমাজসেবা কার্যক্রম শুধু মানবিকই নয়; বরং একটি মৌলিক দায়িত্ব। মুসলিমদের জন্য এটি উম্মাহগত পরিচয়ও বটে। শুধু তা-ই নয়, এ সমাজসেবা হচ্ছে ইসলামি দাওয়াতের ভূমিকাস্বরূপ। হজরত রাসুলে আকরাম (সা.) সমাজসেবার মাধ্যমে আরবের জনমানুষের হৃদয় ও মন জয় করেছিলেন- যা নবুয়তপ্রাপ্তির পর দাওয়াতি কাজে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছিল।

‘হিলফুল ফুজুল’ নামে কল্যাণ সংস্থার সেবাকর্ম দ্বারা নবী (সা.) এতটাই জনপ্রিয় হয়েছিলেন, লোকেরা তাঁকে ‘আল আমিন’ উপাধিতে ভূষিত করেছিল। নবীর সেবাধর্মী চরিত্র ও বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে উম্মুল মুমিনিন হজরত খাদিজাতুল কুবরা (রা.) সাক্ষ্য দিয়ে বলেন, ‘আল্লাহর কসম! আল্লাহ আপনাকে কখনোই অপমানিত করবেন না। আপনি তো আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করেন, অসহায়-দুর্বলের দায়িত্ব বহন করেন, নিঃস্বকে সাহায্য করেন। মেহমানের সমাদর করেন এবং দুর্দশাগ্রস্তকে সাহায্য করেন।’ (বোখারি)।

হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আদর্শকে সামনে রেখে আমাদের সমাজসেবামূলক কর্মসূচি চালিয়ে যেতে হবে। বান্দার হক তথা আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী ও গরিব-দুঃখী মানুষের সাহায্যে এগিয়ে আসা এবং আর্তমানবতার সেবা, সামাজিক সমস্যা দূরীকরণ ও সমাজসেবামূলক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে হবে।

বস্তুত আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী, দরিদ্র, নিঃস্ব, এতিম, নিরাশ্রয়, রোগী ও বিপদগ্রস্ত মানুষকে যথাযথ সেবা করা খুবই সওয়াবের কাজ। আর এতে অমনোযোগী হওয়া আল্লাহপাকের অসন্তুষ্টি ও গোনাহের কাজ। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে কারিমে এরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা আল্লাহর ইবাদত করবে ও কোনো কিছুকে তাঁর সঙ্গে শরিক করবে না এবং বাবা-মা, আত্মীয়স্বজন, এতিম, অভাবগ্রস্ত, নিকট প্রতিবেশী, দূর প্রতিবেশী, সঙ্গী-সাথি, পথচারী এবং তোমাদের অধিকারভুক্ত দাস-দাসীদের প্রতি সদ্ব্যবহার করবে। নিঃসন্দেহে আল্লাহ দাম্ভিক ও অহঙ্কারীকে পছন্দ করেন না- যারা কৃপণতা করে, মানুষকে কৃপণতার নির্দেশ দেয় এবং আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদের যা দিয়েছেন, তা গোপন করে।’ (সুরা নিসা : ৩৬-৩৭)।

আমাদের এই ফাউন্ডেশনের লক্ষ্য হচ্ছে আল্লাহর নৈকট্য ও বিভিন্ন ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে আর্তমানবতার সেবা করা।

🟢 দাওয়াহ - দাওয়াতে দ্বীন ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ। মানবজীবনে ইসলামের অস্তিত্ব নির্ভর করে দাওয়াতি কাজের ওপর। আল্লাহ তা’য়ালা যুগে যুগে যত নবী-রাসূল প্রেরণ করেছেন তাঁদের সকলেরই দায়িত্ব ছিল মানুষের নিকট ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দেয়া। দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ সাধন ও সফলতার বন্ধ তালা একমাত্র দাওয়াতে দ্বীন খুলে দিতে পারে। মানবতার বিবেক ও মানব উন্নয়ন ও বিকাশের দরজার তালা দাওয়াতি কাজই কেবল খুলে দিতে পারে। দাওয়াতি কাজ মানে ইসলাম প্রচার-প্রসারের কাজ। দাওয়াতের মাধ্যমেই ইসলামের ব্যাপক প্রসার ঘটে। মুসলিম জাতির বিস্তৃতি লাভ করে।

বর্তমান সময়ে ইসলামের দাওয়াত অন্যের নিকট পৌঁছাবার গুরুত্ব মোটেও গৌণ করে দেখার কোন সুযোগ নেই। ইসলামের প্রথম প্রকাশ ঘটে দাওয়াতের মাধ্যমে। দাওয়াতের মাধ্যমে ইসলামের অগ্রগতি ও বিকাশ সাধিত হয়। নির্মিত হয় ইসলামী সমাজ ও সভ্যতা। সৃষ্টির আদিকাল থেকে আমাদের আদী পিতা হযত আদম আ. এর মাধ্যমে ইসলামের যে যাত্রা শুরু হয়েছিল এবং সর্বশেষ নবী মুহাম্মদ সা.-এর মাধ্যমে যে ইসলামের পূর্ণাঙ্গতা প্রাপ্ত হয়েছিল এর রশ্মি গোটা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ার পেছনে রয়েছে আল্লাহর পথে নিবেদিত প্রাণ, তাঁর প্রিয় নবী-রাসূলদের অক্লান্ত ত্যাগ, কুরবানী, পরিশ্রম ও ব্যাপক দাওয়াতি কাজ। উম্মাহর উত্থানে দ্বীনি দাওয়াতি কাজের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। বর্তমানে উম্মাহর পতনের কারণও হল দাওয়াতি কাজের দুর্বলতা । সমাজের জাহেলিয়াত কুসংস্কার ও সকল অশ্লীলতার তালা দাওয়াতই খুলে দিতে পারে। একমাত্র ইলাহই মানবতার সকল সমস্যা ও অশান্তির শেকড় কেড়ে নিতে পারে। খুলে দিতে পারে শান্তির পায়রা। দাওয়াত মুসলিম উম্মাহর পুষ্টি সাধন করে। বিশালতা দান করে। দাওয়াতে দ্বীন ইসলামী সভ্যতা বিনির্মাণের প্রাথমিক সোপান। দাওয়াতে দ্বীন ইসলাম অনুশীলনের প্রেরণা যোগায়। দাওয়াতে দ্বীন উম্মাহর স্থবিরতা দূর করে। গতিশীলতা আনয়ন করে। দাওয়াত ব্যক্তি ও সমাজকে জাগিয়ে তুলে। দাওয়াত জাতির বুকে স্বপ্ন জাগায়। আশার আলো দেখায়। জাহেলিয়াতের আঁধার কাটে। সত্যের সোনালী সূর্যোদয় দান করে দাওয়াতের মাধ্যমে।

মহান রাব্বুল আলামিন ইরশাদ করেন, ‘তোমরা শ্রেষ্ট উম্মত, মানবজাতির কল্যাণের জন্য তোমাদের প্রেরণ করা হয়েছে। তোমাদের দায়িত্ব হচ্ছে তোমরা সৎ কাজের আদেশ করবে এবং নিষেধ করবে মন্দ কাজ থেকে। -সুরা ইমরান-১০


সমাজ সেবার লক্ষ্য

১.সমাজের সকল মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ করা।

২.সমাজের সকল মানুষের অধিকার সুরক্ষা করা।

৩.সমাজের সকল মানুষের জন্য সুষ্ঠু ও সুন্দর জীবনের পরিবেশ নিশ্চিত করা।

৪.সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা করা।

৫.সমাজের সকল মানুষের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সম্প্রীতি বৃদ্ধি করা


সমাজ সেবার উদ্দেশ্য

১.দারিদ্র্য, অশিক্ষা, অসুস্থতা, অপরাধ প্রভৃতি সামাজিক সমস্যা সমাধান করা।

২.সমাজের সকল মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।

৩.সমাজের সকল মানুষের জন্য ক্ষমতায়ন বৃদ্ধি করা।

৪.সমাজের সকল মানুষের জন্য সমতা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা।

৫.বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে মানুষের আর্থিক ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা

রাসূলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন ‘আল্লাহ তা‘আলা তার বান্দাদেরকে ততক্ষণ পর্যন্ত সাহায্য করতে থাকেন যতক্ষণ সে তার ভাইয়ের সাহায্য করতে থাকে’। তিরমিযী হা/২৯৪৫; আবূদাঊদ হা/৪৯৪৬; ইবনু মাজাহ হা/১৮৫;মুসলিম হা/২৬৯৯;


আমাদের এই সেবাই অংশগ্রহণ করতে আমাদের জেলা সদস্য হতে নীচের ফর্ম ফিলাপ করে গ্রুপে যুক্ত হোন

https://forms.gle/GRVdctUVXJxWzEpu7

আমাদের সংস্থার কর্যপরিকল্পনা ও আমাদের সংস্থায় অনুদান আবেদন করার জন্য নীচের গ্রুপে যুক্ত হোন  : 

https://chat.whatsapp.com/EYUfTISDVvyLr3ujFwwlq8

আসুন আমাদের এই ফাউন্ডেশনে বিনা স্বার্থে শুধু মাত্র আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের জন্য কাজ করি।

 মানুষ মহান আল্লাহর সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি তাই মানুষকে দয়া ও অনুগ্রহ করা সর্বশ্রেষ্ঠ কাজ ও উত্তম নেক আমল। রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মানুষের প্রতি দয়া ও করুণা করে না আল্লাহ তায়ালাও তার প্রতি দয়া ও করুণা করেন না।’(বুখারি, ৬০১৩)